ঈশ্বরদীতে দুম্বার খামার করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর সোহেল হাওলাদার (৩২) নামের এক যুবক। পাঁচ বছর ধরে তিনি নির্বিঘ্নে খামার পরিচালনা করে প্রতি বছর খরচ বাদে প্রায় ১৫ লাখ টাকা উপার্জন করছেন। দুম্বার পাশাপাশি তাঁর খামারে মূল্যবান তোতাপুরি, হরিয়ানা, পাকিস্তানী বিটল ও দেশীয় মোট ৮০টি ছাগল প্রজাতির প্রাণি রয়েছে।

ঈশ্বরদীর পৌর এলাকার কাচারিপাড়ার ইব্রাহিম হাওলাদারের বড় ছেলে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বাবার সাথে ভারত থেকে পণ্য আমদানির ব্যবসায় নেমে পড়ে। রাজস্থানে যেয়ে সে দুম্বা ও তোতাপুরি প্রতিপালনে আগ্রহী হয়। বাড়িতেই গড়ে তোলে খামার। প্রথমে ঢাকা থেকে ৫টি দুম্বা নিয়ে তাঁর খামারের যাত্রা শুরু।

দুম্বার খামারে গেলে সোহেল জানায়, ৫টি দুম্বা নিয়ে শুরু করলেও এখন তাঁর কাছে ৩৪টি দুম্বা, ৮টি তোতাপুরি, ৬টি পাকিস্তানী বিটল, ১৫টি হরিয়ানাসহ মোট ৮০টি মূল্যবাণ প্রজাতির ছাগল রয়েছে। ইতোমধ্যেই খামারে দুম্বাসহ অন্যান্য প্রজাতির অনেক বাচ্চা হয়েছে। তিনি এখন নিজেই নিয়মিত দুবাই, সৌদিআরব ও ভারতের রাজস্থান থেকে এগুলো আমদানি করার পর প্রতিপালন করে বিক্রি করছেন।

তিনি জানান, বড় সাইজের দুম্বা দেড় থেকে দুই লাখ টাকা, ৩ মাস বয়সী এক লাখ টাকা এবং ৬ মাস বয়সী এক লাখ বিশ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। তোতাপুরি ও হরিয়াণা জাতের বাচ্চা ৩০-৩৫ হাজার টাকা এবং বড় ৬০-৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। পাকিস্তানি বিটলের বাচ্চা ৫০ হাজার আর বড় ১ লাখ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়। পাঁচ মাসে দুম্বা ১টি কোন কোন ক্ষেত্রে ২টি বাচ্চাও প্রসব করে। দেড় বছরে দুইবার বাচ্চা পাওয়া যায়।

তিনি আরো জানান, দুম্বাসহ এসব সুন্দর প্রাণি প্রতিপালনে তেমন কষ্ট নেই এবং অসুখ-বিসূখও কম হয়। এটি অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা জানিয়ে তিনি বলেন, নিজে এবং দুজন কর্মচারী খামার দেখাশোনা করেন। বাংলাদেশের সবখানেই তিনি দুম্বা সরবরাহ করছেন এবং বছরে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করছেন। দুম্বাসহ এসব দামী প্রজাতির ছাগলের সৎ ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বলে জানান তিনি ।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: রফিকুল ইসলাম দুম্বা পালন অত্যন্ত লাভজনক জানিয়ে বলেন, মরু অঞ্চলের প্রাণি হলেও আমাদের পরিবেশগত কোন সমস্যা নেই। সোহেলের খামার ফাঁকা স্থানে হলে আরো বেশী লাভবান হতো।

চরাঞ্চল দুম্বা প্রতিপালনের জন্য উপযোগী জানিয়ে তিনি আরো জানান, ঘাস খাওয়ার পাশাপাশি কিছু দানাদার খাদ্যের কারণে দুম্বা পালনে খরচ কম হয়। দুম্বার বাচ্চার দাম বেশী এবং প্রতিপালনে পরিবেশগত যে কোন সমস্যা নেই, এটা না জানার কারণে অনেকে দুম্বা পালনে আগ্রহী হচ্ছে না।

তথ্যূত্র: আলোকিত সকাল।